কিভাবে গুগল এডসেন্স একাউন্ট খুলব - এডসেন্স একাউন্ট খোলার নিয়ম

গুগল এডসেন্স কি এবং গুগল এডসেন্স কিভাবে কাজ করে?

প্রিয় পাঠকবৃন্দ, আপনি যদি কিভাবে গুগল এডসেন্স একাউন্ট খুলব বা এডসেন্স একাউন্ট খোলার নিয়ম সম্পর্কে জানতে ইচ্ছুক হন তবে আমরা মনে করি আপনি একদম সঠিক জায়গাতে এসে ক্লিক করেছেন। কেননা আজকে আমরা উক্ত বিষয়টি নিয়ে বিস্তারভাবে আলোচনা করবো। 

কিভাবে গুগল এডসেন্স একাউন্ট খুলব

তাই আসুন আজ আমরা খুব সহজ ভাষায় এবং ধাপে ধাপে আলোচনা করি কিভাবে গুগল এডসেন্স একাউন্ট খুলব এবং এডসেন্স একাউন্ট খোলার নিয়ম সম্পর্কে। চলুন তবে বিস্তারিত আলোচনায় যাওয়া যাক এবং জেনে নেওয়া যাক টাকা ইনকাম করার একটি মাধ্যম গুগল এডসেন্স সম্পর্কে।

পোস্টের মূল পয়েন্টসমূহ: কিভাবে গুগল এডসেন্স একাউন্ট খুলব এবং এডসেন্স একাউন্ট খোলার নিয়ম

গুগল এডসেন্স কী?

আমরা অনেকেই চাই যে, আমাদের একটি ব্লগ সাইট, ইউটিউব অ্যাকাউন্ট, ফেসবুক বা ইন্সট্রাগ্রাম অ্যাকাউন্ট থাকুক এবং সেখানে আমরা প্রতিনিয়ত নতুন নতুন বিষয় পোস্ট করে সেখানে থেকে টাকা ইনকাম করতে পারি। তবে আমি বলতে পারি আপনি একদম ঠিক জায়গাতে এসেছে। কারণ আমরা আজকে টাকা ইনকামের একটি মাধ্যম সম্পর্কে আপনাদের সামনে আলোচনা করবো যেটি হলো: গুগল এডসেন্স। গুগল এডসেন্স এমন একটি প্ল্যাটফর্ম যা আপনাকে আপনার কন্টেন্ট থেকে আয় করার সুযোগ দেয়। তবে, আমরা অনেকেই এডসেন্স একাউন্ট খোলার সঠিক প্রক্রিয়াটি সম্পর্কে জানিনা আর যারা জানে তাদের নিকট এটি জটিল মনে হয়।

প্রিয় পাঠকবৃন্দ, কিভাবে গুগল এডসেন্স একাউন্ট খুলব এবং এডসেন্স একাউন্ট খোলার নিয়মটি জানার পূর্বে আমাদের সর্বপ্রথম যেটি জানা উচিত সেটি হচ্ছে গুগল এডসেন্স মূলত কী এটি সম্পর্কে জানতে হবে। তাই চলুন অল্প করে জেনে আসা যাক গুগল এডসেন্স কী?

গুগল এডসেন্স (Google AdSense) হলো গুগলের একটি আয়ের মাধ্যম, যা ওয়েবসাইট, ব্লগ বা ইউটিউব চ্যানেলের মাধ্যমে বিজ্ঞাপন প্রদর্শন করে অর্থ উপার্জনের সুযোগ করে দেয়। গুগল এডসেন্স এমন একটি প্ল্যাটফর্ম যেখানে ওয়েবসাইট মালিকরা তাদের সাইটে গুগলের বিজ্ঞাপন দেখানোর অনুমতি দেয়, এবং এর বিনিময়ে তারা আয় করেন। এটি গুগলের বিজ্ঞাপন পরিষেবার একটি অংশ এবং অনলাইনে প্যাসিভ ইনকাম (Passive Income) করার জন্য এটি একটি চমৎকার মাধ্যম।

গুগল এডসেন্সের মাধ্যমে প্রদর্শিত বিজ্ঞাপনগুলো সাধারণত ওয়েবসাইটের কন্টেন্ট এবং দর্শকদের আগ্রহের উপর ভিত্তি করে তৈরি হয়। উদাহরণস্বরূপ, যদি আপনার সাইটে স্বাস্থ্য নিয়ে আলোচনা করা হয়, তবে সেখানে স্বাস্থ্যসেবা বা ফিটনেস সম্পর্কিত বিজ্ঞাপন দেখানো হবে। এটি এমন একটি স্বয়ংক্রিয় পদ্ধতি যা বিজ্ঞাপনের মান এবং দর্শকদের আগ্রহ উভয়কেই গুরুত্ব দেয়।

গুগল এডসেন্সের সুবিধাগুলো কী কী?

গুগল এডসেন্সের সুবিধাগুলো কী কী?

গুগল এডসেন্স অনেক সুবিধা প্রদান করে, যা ওয়েবসাইট মালিকদের জন্য এটি একটি আদর্শ আয়ের উৎস করে তোলে। নিচে এডসেন্সের কিছু উল্লেখযোগ্য সুবিধা বিস্তারিতভাবে আলোচনা করা হলো:

০১. সহজ সেটআপ এবং ব্যবহারের সুবিধা

গুগল এডসেন্স ব্যবহার শুরু করা অত্যন্ত সহজ। একবার আপনার অ্যাকাউন্ট অ্যাপ্রুভ হয়ে গেলে, গুগল আপনাকে একটি কোড প্রদান করবে যা আপনাকে আপনার ওয়েবসাইটে যোগ করতে হবে। এর পর থেকে, গুগল স্বয়ংক্রিয়ভাবে আপনার সাইটের জন্য উপযুক্ত বিজ্ঞাপন দেখাতে শুরু করবে। এটি এমনকি নতুনদের জন্যও ব্যবহার উপযোগী।

০২. প্যাসিভ ইনকামের সুযোগ

আপনার ওয়েবসাইট বা ব্লগ যদি জনপ্রিয় হয় এবং প্রতিদিন ভিজিটর আসে, তবে গুগল এডসেন্সের মাধ্যমে আপনি ঘরে বসেই ভালো আয় করতে পারবেন। এমনকি যখন আপনি ঘুমিয়ে থাকেন, তখনও বিজ্ঞাপন ক্লিক বা ভিউ থেকে আপনি অর্থ উপার্জন করবেন।

০৩. বিজ্ঞাপনের বৈচিত্র্য

গুগল এডসেন্সে আপনি বিভিন্ন ধরনের বিজ্ঞাপন দেখতে পাবেন, যেমন:

  • টেক্সট বিজ্ঞাপন
  • ব্যানার বিজ্ঞাপন
  • ভিডিও বিজ্ঞাপন
  • ফিড বিজ্ঞাপন

এই বৈচিত্র্য আপনাকে আপনার সাইটের লেআউট অনুযায়ী বিজ্ঞাপন নির্বাচন করার সুযোগ দেয়।

০৪. আন্তর্জাতিক দর্শকদের লক্ষ্য করা সম্ভব

আপনার সাইট যদি বহুভাষিক হয় এবং আন্তর্জাতিক ভিজিটর পায়, তাহলে গুগল এডসেন্সের মাধ্যমে আপনি বৈশ্বিক বিজ্ঞাপনদাতাদের সাথেও সংযোগ স্থাপন করতে পারবেন। এটি আপনার আয়ের সুযোগকে বহুগুণে বাড়িয়ে দেয়।

০৫. নির্ভরযোগ্য এবং নিরাপদ পেমেন্ট সিস্টেম

গুগল এডসেন্সের পেমেন্ট ব্যবস্থা অত্যন্ত নির্ভরযোগ্য। আপনার আয় $১০০ হলে গুগল তা নির্দিষ্ট সময়ে আপনার ব্যাংক অ্যাকাউন্টে স্থানান্তর করবে। পেমেন্টের ক্ষেত্রে গুগল কোনো বিলম্ব বা অসুবিধা তৈরি করে না।

০৬. পরিসংখ্যান এবং বিশ্লেষণ সহজলভ্য

গুগল এডসেন্স আপনাকে বিজ্ঞাপন প্রদর্শনের বিশ্লেষণ এবং আয় সংক্রান্ত ডাটা প্রদান করে। এর মাধ্যমে আপনি জানতে পারবেন কোন বিজ্ঞাপনগুলো বেশি আয় করছে এবং আপনার দর্শকরা কী ধরনের কন্টেন্ট পছন্দ করছেন।

গুগল এডসেন্স একাউন্ট খোলার আগে প্রয়োজনীয় শর্তাবলী

গুগল এডসেন্সের জন্য অ্যাপ্লাই করার আগে আপনাকে কিছু গুরুত্বপূর্ণ শর্ত পূরণ করতে হবে। এই শর্তাবলী পূরণ না করলে আপনার আবেদন প্রত্যাখ্যান হতে পারে। নিচে এই শর্তগুলোর বিস্তারিত ব্যাখ্যা দেওয়া হলো:

  • মানসম্মত কন্টেন্ট তৈরি করা: আপনার ওয়েবসাইটে উচ্চমানের এবং মৌলিক কন্টেন্ট থাকা বাধ্যতামূলক। গুগল এমন কন্টেন্ট গ্রহণ করে না, যা অন্য কোথাও থেকে কপি করা হয়েছে। উদাহরণস্বরূপ:
    • আপনার কন্টেন্ট তথ্যপূর্ণ এবং পাঠকদের জন্য উপযোগী হতে হবে।
    • কন্টেন্টে বানান ও ব্যাকরণগত ত্রুটি থাকা উচিত নয়।
    • আপনার বিষয়বস্তু অবশ্যই গুগলের নীতিমালা মেনে তৈরি করতে হবে।
  • ওয়েবসাইটের ন্যূনতম বয়স: গুগল সাধারণত ৬ মাসের কম বয়সী ওয়েবসাইট অ্যাপ্রুভ করে না। এটি প্রধানত ব্যবহারকারীর দেশ এবং ওয়েবসাইটের কার্যক্রমের উপর নির্ভর করে।
  • প্রয়োজনীয় পৃষ্ঠাসমূহের উপস্থিতি: আপনার ওয়েবসাইটে নিম্নলিখিত পৃষ্ঠাগুলো থাকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, যেমন:
  • প্রাইভেসি পলিসি: এই পেজটি ব্যবহারকারীদের জানায় যে আপনি কীভাবে তাদের তথ্য ব্যবহার করছেন।
  • অ্যাবাউট আস পেজ: এখানে আপনার ওয়েবসাইটের উদ্দেশ্য এবং লক্ষ্য সম্পর্কে বিস্তারিত উল্লেখ থাকবে।
  • কন্টাক্ট পেজ: আপনার সঙ্গে যোগাযোগের জন্য একটি পৃষ্ঠা থাকা জরুরি।
  • নিয়মিত ভিজিটর এবং ট্রাফিক: গুগল এডসেন্স অ্যাপ্রুভ পেতে আপনার সাইটে পর্যাপ্ত ভিজিটর থাকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। গুগল চায় যে বিজ্ঞাপনগুলি পর্যাপ্ত দর্শকের কাছে পৌঁছাবে।
  • গুগলের নীতিমালা মেনে চলা: গুগল এডসেন্সের জন্য আবেদন করার আগে আপনাকে অবশ্যই তাদের নীতিমালা সম্পর্কে ধারণা নিতে হবে এবং তা মেনে চলতে হবে। নিম্নলিখিত বিষয়গুলো বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য:
    • কোনো বেআইনি বা প্রাপ্তবয়স্ক কন্টেন্ট প্রকাশ করা যাবে না।
    • ক্লিকবেইট কন্টেন্ট বা দর্শকদের প্রতারণামূলকভাবে বিজ্ঞাপন ক্লিক করানোর প্রচেষ্টা করা যাবে না।
  • সাইটের ডিজাইন এবং গতি: আপনার ওয়েবসাইট ব্যবহারকারীদের জন্য সহজে নেভিগেশনযোগ্য এবং মোবাইল-ফ্রেন্ডলি হতে হবে। সাইটের লোডিং স্পিড দ্রুত হলে তা দর্শকদের আকর্ষণ করতে সাহায্য করে।
  • নির্দিষ্ট আয়তনের কন্টেন্ট থাকা: গুগল এডসেন্সের জন্য আবেদন করার সময় আপনার সাইটে ন্যূনতম ১৫-২০টি ব্লগ পোস্ট থাকা ভালো। প্রতিটি পোস্টের দৈর্ঘ্য কমপক্ষে ৫০০-১০০০ শব্দ হওয়া উচিত।

আপনি যদি এই শর্তগুলো পূরণ করেন এবং মানসম্মত কন্টেন্ট তৈরি করেন, তবে গুগল এডসেন্স অ্যাপ্রুভ পাওয়া সহজ হবে। আপনার ওয়েবসাইটে কাস্টমাইজড কন্টেন্ট তৈরি এবং নীতিমালা মেনে চলার মাধ্যমে গুগলের আস্থা অর্জন করুন এবং আপনার আয় বাড়ান।

কিভাবে গুগল এডসেন্স একাউন্ট খুলব?

কিভাবে গুগল এডসেন্স একাউন্ট খুলব?

আমরা উপরে আলোচনা করে এসেছি, গুগল এডসেন্স একটি অনন্য প্ল্যাটফর্ম যা ওয়েবসাইট বা ব্লগের মাধ্যমে বিজ্ঞাপন দেখিয়ে আয় করার সুযোগ দেয়। যারা নতুন শুরু করতে চান, তাদের জন্য এডসেন্স অ্যাকাউন্ট খোলার প্রক্রিয়া সঠিকভাবে জানা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এখানে আমরা ধাপে ধাপে প্রক্রিয়াটি আলোচনা করা হলো। তাই চলুন এবার জেনে আসা যাক কিভাবে গুগল এডসেন্স একাউন্ট খুলব?

একটি একাউন্ট তৈরির ধাপসমূহ

গুগল এডসেন্স একাউন্ট খোলার জন্য আপনাকে কিছু নির্দিষ্ট ধাপ অনুসরণ করতে হবে। নিচে প্রতিটি ধাপ বিস্তারিতভাবে আলোচনা করা হলো:

  • গুগল একাউন্ট থাকা বাধ্যতামূলক: গুগল এডসেন্স ব্যবহার করার জন্য একটি গুগল অ্যাকাউন্ট থাকা প্রয়োজন। যদি আপনার আগে থেকেই গুগল অ্যাকাউন্ট থাকে, তাহলে সেটি ব্যবহার করতে পারেন। তবে আপনি যদি নতুন একাউন্ট তৈরি করতে চান তাহলে গুগল একাউন্ট তৈরি পৃষ্ঠাতে যান। আপনার নাম, ইমেইল এবং পাসওয়ার্ড দিয়ে একটি অ্যাকাউন্ট তৈরি করুন।
  • এডসেন্স ওয়েবসাইটে প্রবেশ করা: আপনার গুগল অ্যাকাউন্ট দিয়ে লগইন করার পর, গুগল এডসেন্স ওয়েবসাইটে প্রবেশ করুন। এখানে "Get Started" বাটনে ক্লিক করে পরবর্তী ধাপে যান।
  • ওয়েবসাইটের তথ্য প্রদান করা: এডসেন্সের জন্য আবেদন করার সময় আপনার ওয়েবসাইট বা ব্লগের URL জমা দিতে হবে।

    • আপনার সাইটটি হতে হবে নীতিমালা অনুযায়ী।
    • কোনো বেআইনি, প্রাপ্তবয়স্ক বা কপিরাইট লঙ্ঘনকারী কন্টেন্ট থাকা যাবে না।

  • ব্যক্তিগত তথ্য পূরণ করা: এডসেন্স একাউন্টের জন্য আপনাকে আপনার নাম, ঠিকানা, এবং পেমেন্ট সম্পর্কিত তথ্য প্রদান করতে হবে। এই তথ্য সঠিকভাবে প্রদান করুন, কারণ ভবিষ্যতে পেমেন্ট পেতে এটি প্রয়োজন হবে।

  • এডসেন্স কোড ইনস্টল করা: গুগল এডসেন্স আপনার জন্য একটি HTML কোড প্রদান করবে। এই কোডটি আপনার ওয়েবসাইটে নির্দিষ্ট স্থানে যোগ করতে হবে। এটি গুগলকে আপনার সাইটের কার্যক্রম মনিটর করতে এবং বিজ্ঞাপন প্রদর্শনের অনুমতি দেয়।

  • পর্যালোচনার জন্য অপেক্ষা করা: আপনার আবেদন জমা দেওয়ার পর গুগল আপনার সাইট পর্যালোচনা করবে। সাধারণত ১-২ সপ্তাহ সময় লাগে। এই সময়ে নিশ্চিত করুন যে আপনার সাইটে কোনো সমস্যা নেই।

এডসেন্স একাউন্ট ভেরিফাই করার প্রক্রিয়া

গুগল এডসেন্স অ্যাকাউন্ট ভেরিফাই করা একটি গুরুত্বপূর্ণ ধাপ। এটি আপনার সাইটের বৈধতা এবং পেমেন্ট প্রক্রিয়ার সঠিকতা নিশ্চিত করে। নিচে এডসেন্স একাউন্ট ভেরিফিকেশন প্রক্রিয়া নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো:

  • ঠিকানা ভেরিফিকেশন (PIN Verification): গুগল এডসেন্স আপনার ঠিকানা ভেরিফাই করতে একটি PIN (Personal Identification Number) প্রেরণ করে। প্রক্রিয়াটি নিম্নরূপ:

    • আপনার এডসেন্স অ্যাকাউন্টে $১০ আয় হলে গুগল একটি PIN জেনারেট করবে।
    • এই PIN পোস্ট অফিসের মাধ্যমে আপনার দেওয়া ঠিকানায় পাঠানো হবে।
    • আপনি PIN পাওয়ার পর, তা এডসেন্স অ্যাকাউন্টে লগইন করে নির্ধারিত স্থানে প্রদান করুন।

  • পেমেন্ট পদ্ধতি যোগ করা: আপনার আয় পেতে একটি বৈধ পেমেন্ট পদ্ধতি যোগ করতে হবে। সাধারণত ব্যাংক অ্যাকাউন্ট বা ওয়েস্টার্ন ইউনিয়নের মাধ্যমে পেমেন্ট পাওয়া যায়।

    • ব্যাংকের সঠিক তথ্য প্রদান করুন।
    • গুগল একটি সামান্য পরিমাণ অর্থ আপনার ব্যাংক অ্যাকাউন্টে স্থানান্তর করবে।
    • আপনি সেই স্থানান্তরের পরিমাণ নিশ্চিত করলে, পেমেন্ট পদ্ধতি ভেরিফাই হয়ে যাবে।

  • ট্যাক্স তথ্য প্রদান করা: গুগল এডসেন্স ব্যবহারকারীদের ট্যাক্স তথ্য প্রদান করতে হয়। এটি নির্ভর করে আপনি কোন দেশে অবস্থান করছেন।

    • ট্যাক্স ফর্ম পূরণ করুন এবং সঠিক তথ্য প্রদান করুন।
    • ট্যাক্স তথ্য ভেরিফাই হলে আপনার আয় বৈধভাবে পাওয়া যাবে।

  • ডোমেইন ভেরিফিকেশন: গুগল এডসেন্সে যোগ দেওয়ার পর, আপনার ডোমেইনের মালিকানা নিশ্চিত করতে হবে।

    • ডোমেইনের সেটিংসে গিয়ে গুগল প্রদত্ত কোডটি যোগ করুন।
    • গুগল তা যাচাই করে নিশ্চিত করবে যে আপনি ডোমেইনের বৈধ মালিক।

  • ওয়েবসাইটের ট্রাফিক এবং নীতিমালা মেনে চলা: আপনার ওয়েবসাইটে নির্দিষ্ট পরিমাণ ভিজিটর থাকা উচিত এবং গুগলের নীতিমালা মেনে চলতে হবে।

    • যদি আপনার সাইটে প্রতিদিন ভিজিটর সংখ্যা কম হয়, তবে অ্যাপ্রুভাল পেতে অসুবিধা হতে পারে।
    • নিশ্চিত করুন যে আপনার সাইটে কপিরাইট লঙ্ঘনকারী কোনো কন্টেন্ট নেই।

গুগল এডসেন্স অ্যাকাউন্ট খোলার এবং ভেরিফাই করার প্রক্রিয়া সহজ হলেও গুগলের নীতিমালা মেনে চলা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। উপরে বর্ণিত ধাপগুলো অনুসরণ করলে আপনি সহজেই একটি অ্যাকাউন্ট তৈরি করতে পারবেন এবং সফলভাবে বিজ্ঞাপন থেকে আয়ের মাধ্যমে লাভবান হতে পারবেন।

কিভাবে গুগল এডসেন্সে ওয়েবসাইট বা ইউটিউব চ্যানেল সংযুক্ত করবেন?

কিভাবে গুগল এডসেন্সে ওয়েবসাইট বা ইউটিউব চ্যানেল সংযুক্ত করবেন?

গুগল এডসেন্সে আপনার ওয়েবসাইট বা ইউটিউব চ্যানেল সংযুক্ত করার প্রক্রিয়া খুবই সহজ, তবে এটি সঠিকভাবে সম্পন্ন করতে হলে কিছু গুরুত্বপূর্ণ ধাপ অনুসরণ করতে হয়। নিচে ধাপে ধাপে পুরো প্রক্রিয়াটি ব্যাখ্যা করা হয়েছে:

০১. আপনার অ্যাকাউন্টে লগইন করুন

  • গুগল এডসেন্স অ্যাকাউন্টে লগইন করুন।
  • গুগল এডসেন্স ওয়েবসাইটে যান।
  • আপনার গুগল অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করে সাইন ইন করুন।
  • একবার লগইন করলে, আপনি এডসেন্স ড্যাশবোর্ডে প্রবেশ করবেন।

সাইট বা চ্যানেল যোগ করার মাধ্যম

এডসেন্স অ্যাকাউন্টে নতুন একটি সাইট বা ইউটিউব চ্যানেল সংযুক্ত করার জন্য নিচের ধাপগুলো অনুসরণ করুন:

  • ড্যাশবোর্ড থেকে "Sites" অপশনটি ক্লিক করুন।
  • "Add Site" বাটনে ক্লিক করে আপনার ওয়েবসাইটের URL যোগ করুন।
  • গুগল একটি HTML কোড প্রদান করবে যা আপনার সাইটে যোগ করতে হবে।
  • এই কোডটি আপনার ওয়েবসাইটের <head> সেকশনে যুক্ত করুন।

ইউটিউব চ্যানেল সংযোগের জন্য

  • ইউটিউব স্টুডিওতে যান এবং আপনার চ্যানেল সেটিংসে ক্লিক করুন।
  • "Monetization" অপশনটি চালু করুন।
  • গুগল এডসেন্স অ্যাকাউন্ট লিঙ্ক করার অপশনটি নির্বাচন করুন।
  • আপনার এডসেন্স অ্যাকাউন্টে সাইন ইন করুন এবং প্রয়োজনীয় অনুমোদন দিন।

০৩. যাচাই প্রক্রিয়া সম্পন্ন করুন

  • ওয়েবসাইট বা ইউটিউব চ্যানেল সংযোগের পরে, গুগল আপনার প্রদত্ত তথ্য যাচাই করবে।
  • সাধারণত ২৪-৭২ ঘণ্টার মধ্যে যাচাই প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়।
  • এই সময়ে নিশ্চিত করুন যে আপনার ওয়েবসাইট বা চ্যানেল গুগলের নীতিমালা মেনে চলছে।

০৪. বিজ্ঞাপন প্রদর্শন শুরু করুন

  • যাচাই প্রক্রিয়া সম্পন্ন হলে, আপনি আপনার ওয়েবসাইট বা চ্যানেলে বিজ্ঞাপন প্রদর্শন শুরু করতে পারবেন।
  • এডসেন্স অ্যাকাউন্টে লগইন করে বিজ্ঞাপন ইউনিট তৈরি করুন।
  • এই ইউনিটের কোড আপনার ওয়েবসাইটে যোগ করুন।
  • ইউটিউবের ক্ষেত্রে, গুগল স্বয়ংক্রিয়ভাবে বিজ্ঞাপন স্থাপন করবে।

পেমেন্ট সেটআপের ধাপসমূহ

গুগল এডসেন্স থেকে আয় তোলার জন্য একটি সঠিক পেমেন্ট সেটআপ থাকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এখানে ধাপে ধাপে পেমেন্ট সেটআপ করার প্রক্রিয়াটি আলোচনা করা হলো:

০১. পেমেন্ট পদ্ধতি নির্বাচন করুন

  • গুগল এডসেন্সে পেমেন্ট পেতে হলে প্রথমে একটি পেমেন্ট পদ্ধতি নির্বাচন করতে হবে।
  • "Payments" ট্যাবে যান।
  • "Add Payment Method" অপশনে ক্লিক করুন।
  • ব্যাংক অ্যাকাউন্ট বা অন্য উপলব্ধ পদ্ধতির তথ্য দিন।

০২. ব্যাংক তথ্য যোগ করুন

  • আপনার পেমেন্ট সরাসরি ব্যাংক অ্যাকাউন্টে পাওয়ার জন্য নিচের ধাপগুলো অনুসরণ করুন:
  • ব্যাংকের নাম, শাখা, এবং SWIFT কোড প্রদান করুন।
  • ব্যাংক অ্যাকাউন্ট নম্বর সঠিকভাবে লিখুন।
  • গুগল একটি সামান্য পরিমাণ অর্থ আপনার অ্যাকাউন্টে স্থানান্তর করবে যাচাইয়ের জন্য।

০৩. ট্যাক্স তথ্য প্রদান করুন

  • গুগল আপনার আয় বৈধ করার জন্য ট্যাক্স তথ্য চায়।
  • আপনার দেশের ট্যাক্স ফর্ম পূরণ করুন।
  • সঠিক তথ্য নিশ্চিত করুন, কারণ এটি ভবিষ্যতে আয়ের উপর প্রভাব ফেলতে পারে।

০৪. পেমেন্ট থ্রেশোল্ড পূরণ করুন

  • গুগল এডসেন্সে পেমেন্ট তুলতে হলে আপনাকে $১০০ পেমেন্ট থ্রেশোল্ড পূরণ করতে হবে।
  • আপনার অ্যাকাউন্টে $১০০ পৌঁছালে, গুগল স্বয়ংক্রিয়ভাবে পেমেন্ট প্রক্রিয়া করবে।
  • পেমেন্টের জন্য নির্ধারিত তারিখ প্রতি মাসের ২১-২৬ তারিখের মধ্যে।

০৫. পেমেন্ট রিলিজ প্রক্রিয়া নিশ্চিত করুন

  • পেমেন্ট রিলিজ হওয়ার পর, আপনার ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে এটি স্থানান্তরিত হতে ২-৫ কার্যদিবস সময় লাগতে পারে।
  • পেমেন্টের সময় ব্যাংক ট্রানজেকশন ফি প্রযোজ্য হতে পারে।
  • আপনার অ্যাকাউন্ট রেকর্ড নিয়মিত চেক করুন।

শেষ কথন

গুগল এডসেন্সে সফলভাবে একাউন্ট খোলা এবং সেটআপ সম্পন্ন করা কঠিন নয়, তবে এটি সম্পূর্ণ করতে ধৈর্য এবং সঠিক দিকনির্দেশনার প্রয়োজন। আপনি যদি আমাদের লেখাটি সম্পূর্ণ পড়ে থাকে তবে আমরা আশাবাদী যে আপনি এখন নিজের জন্য একটি গুগল এডসেন্স অ্যাকউন্ট খুব সহজে খুলতে পারেন কেননা আমরা পুরো প্রক্রিয়াটি ধাপে ধাপে আপনাদের খুব সহজভাবে বুঝিয়েছি। তাই আপনি যদি টাকা ইনকাম করতে চান তবে গুগল এডসেন্স অ্যাকউন্ট খুলে সেখানে থেকে টাকা ইনকাম করতে পারবেন। তবে মাথায় রাখুন, অনলাইন থেকে টাকা ইনকাম করতে হলে অবশ্যই ধৈর্য্যের সাথে সময় নিয়ে কাজ করতে হবে। আপনি যদি তাড়াহুড়া করে কাজ করেন তবে আপনি অনলাইন থেকে কিছুই করতে পারবেন না। তাই ধৈর্য্যের সাথে সময় নিয়ে কাজ করুন।

আমরা আশা করছি আপনি আমাদের পোস্টটি সম্পূর্ণ পড়েছেন এবং কিভাবে গুগল এডসেন্স একাউন্ট খুলব এবং এডসেন্স একাউন্ট খোলার নিয়ম সম্পর্কে অনেক গুরুত্বপূর্ণ তথ্য ও জ্ঞান অর্জন করতে সক্ষম হয়েছেন। 

আমাদের মূল লক্ষ্য হলো আপনাদের মাঝে সঠিক তথ্যগুলোকে উপস্থাপন করা এবং পৌঁছে দেওয়া এবং এতে আপনাদের সহযোগীতা আমরা একান্তভাবে কাম্য করছি। লেখাটি আপনাদের পরিবার, বন্ধু-বান্ধব ও আরো অন্যান্যদের নিকট শেয়ার করে তাদেরও এই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়টি জানার সুযোগ করে দিন।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন